Post Collected from GBC Fb Group
আমার এক ক্লোজ বড় ভাই ভাল জব করে, ভাল টাকা স্যালারি পায়। আল্লাহ'র রহমতে কিছুদিন আগে বিয়ে করল। কিন্তু হিসাব মতে ওনার আরো ২ বছর আগেই বিয়ে করার কথা ছিল।
তো বছর দেড়েক আগে ভাইরে জিজ্ঞেস করেছিলামঃ ভাই, আপনার ক্যারিয়ার তো এখন স্যাটেল। বিয়েটা কইরা ফেলেন। যা বেতন পান তা দিয়া বউ নিয়া খুব ভালভাবেই চলতে পারবেন।
ভাই ফার্ষ্টে চুপ। এরপরে বলা ষ্টার্ট করলঃ শোন, একটা গাড়ি চালাইতে ধর ঘণ্টায় ১০ লিটার তেল লাগে, কিন্তু ষ্টার্ট দিতে লাগে ১০০ লিটার তেল। তোর কাছে ইনিশিয়াল ১০০ লিটার তেল নাই, কিন্তু আমি ঘন্টায় তোরে ১০ লিটার কইরা তেল দিলাম, গাড়িটা চালাইতে পারবি? বিয়েটা ও এমন, করার পরে হয়তো চলতে পারব, কিন্তু বিয়ে করার খরচ সম্পর্কে কোন আইডিয়া আছে?
৬ মাস আগে কমিউনিটি সেন্টার ভাড়া করা লাগবে, হলুদের জন্য আলাদা হল, বিয়ের জন্য আলাদা। হলুদের আর বিয়ের জন্য ড্রেস কোডও আলাদা। তার উপ্রে নিজের আর বউয়ের আত্মীয় স্বজনরে ড্রেস কেনার টাকা হয়তো আমারেই দেওয়া লাগবে। আম্মার নির্দেশ, কয়েক ভরি স্বর্ণ কেনা লাগবে। নাইলে ফ্যামিলির ইজ্জ্বত থাকবে না। আবার ব্র্যান্ড ভালু ফটোগ্রাফার না আসলে ফ্রেন্ড সার্কেলেও ইজ্জ্বত থাকবেনা। আর এখন শুধু ছবি হইলেই হবেনা, সাথে এইচডি ভিডিও অ্যাড হইছে। এইটা এখন ট্রেন্ড, এর বাইরে ও যাওয়া যাবেনা।
পাগড়ী, কুর্তি, শেরওয়ানি, বউয়ের প্রথম শাড়ি, দ্বিতীয় শাড়ি, তৃতীয় শাড়ি......, গেটের টাকা, হাত ধোওয়ার টাকা, গাড়ির টাকা, ষ্টেজ ডেকোরেশন সহ খুচরা টাকার হিসাব করলেও তিন চার লাখ। আর সব মিলাইয়া ৮-১০ লাখের নিচে বিয়া করলে সমাজ আমারে ফকিন্নির পুত কইব। কিন্তু ধার-কর্য কইরা ১০-১২ লাখ টাকা খরচ কইরা বিয়া করলে সমাজ আমারে রুচিশীল নাগরিকের সম্মান দিবে।
আমি হেসে বললামঃ বিয়া তো লাইফে একটাই করবেন। করলেন না হয় একটু খরচ।
ভাই তো এইবার পুরা ক্ষ্যাপা।
কয়ঃ আরে ব্যাটা, টাকা কিংবা এর আউটপুটের কিছুটাও যদি আমাদের লাইফে কাজে লাগত নিজের জন্য না হোক বউয়ের জন্য হইলেও করতাম খরচ। কমিউনিটি সেন্টার ডেকোরেশন কইরা আমাদের সংসারের কি লাভ? পরের দিনই ওরা ঐটা ধুইয়া নতুন কারো জন্য ডেকোরেশন করবে। অথচ এই টাকা দিয়া আমি আমাদের নতুন বাসাটা গুছাইতাম, আজীবনের সৌন্দর্য্য ভোগ করতে পারতাম। আত্মীয় স্বজনরে এত নতুন কাপড় দিয়া আহ্লাদ কইরা বাসায় ডাইকা আইনা যত্ন-টত্ন কইরা কি লাভ? একটু পান থিকা চুন খসলেই দেখবি বিয়াতে প্যাচ লাগাইয়া দিছে।তারচেয়ে এই টাকা দিয়া এতিম মিসকিন খাওয়াইলে অ্যাটলিষ্ট মন থিকা কিছু দোয়া পাইতাম।
কয়ঃ আরে ব্যাটা, টাকা কিংবা এর আউটপুটের কিছুটাও যদি আমাদের লাইফে কাজে লাগত নিজের জন্য না হোক বউয়ের জন্য হইলেও করতাম খরচ। কমিউনিটি সেন্টার ডেকোরেশন কইরা আমাদের সংসারের কি লাভ? পরের দিনই ওরা ঐটা ধুইয়া নতুন কারো জন্য ডেকোরেশন করবে। অথচ এই টাকা দিয়া আমি আমাদের নতুন বাসাটা গুছাইতাম, আজীবনের সৌন্দর্য্য ভোগ করতে পারতাম। আত্মীয় স্বজনরে এত নতুন কাপড় দিয়া আহ্লাদ কইরা বাসায় ডাইকা আইনা যত্ন-টত্ন কইরা কি লাভ? একটু পান থিকা চুন খসলেই দেখবি বিয়াতে প্যাচ লাগাইয়া দিছে।তারচেয়ে এই টাকা দিয়া এতিম মিসকিন খাওয়াইলে অ্যাটলিষ্ট মন থিকা কিছু দোয়া পাইতাম।
ফটোগ্রাফার, ভিডিওগ্রাফারের চেয়ে নিজের ভাই ব্রাদার ফ্রেন্ড দিয়া ছবি তুলিয়ে বকেয়া পরিশোধ করে ক্রেডিটকার্ডের লোনের টেনশনটা একটু হইলেও কমত। মানুষ হয়ত বিয়েতে কিছু গিফট দিবে, ঐগুলাও দেখার আগেই আত্মীয় স্বজন ভাগ কইরা নিয়া যাবে। এক ডিনার সেট নিয়া ছয়জনে মিল্লা টানাটানি করবে, ঐটা নিয়াও দেখবি ঝগড়া, মুখ কালাকালি ইত্যাদি ইত্যাদি। আরো বহুত ব্যাপার তো আছেই, ঐগুলা আর বললাম না।
যাহোক, ফাইনালি টাকা পয়সা জমাইয়া ভাই ১০-১৫ লাখ টাকা খরচ কইরা বিয়ে না করলেও বেশ ভালই খরচ করে বিয়ে করেছে। তবে সুন্দরমত কস্ট কাটিং করেই করেছে বিয়েটা। ঐ টাকা দিয়া সুন্দর করে ঘর গুছাইছে। সুখের সংসার। ওদের জামাই বউরে দেখলেই শান্তি লাগে।
কিন্তু ভাইয়ের আত্মীয় স্বজন একদমই খুশিনা, কারণ মেয়ে জাদু করছে ছেলেরে। নাইলে এই স্বর্ণের টূকরা ছেলে এত সস্তায় ক্যাম্নে বিয়েটা করল। আমরা কোনো কাপড়চোপড় পাইলাম না। আহহরে, ছেলেটারে হারাইলাম, হায় হায়...।
এদিকে বউয়ের আত্মীয় স্বজনও খুশি না। কারণ, জামাই কিপটা। নরমাল একটা কমিউনিটিসেন্টার ভাড়া কইরা, নিজের ভাই ব্রাদার দিয়া ছবি তোলাইছে। ভাল ফেসবুক পেইজ থেকে বিয়ের ছবি শেয়ার হয় নাই। আমাদের ঘরের মেয়ে যে ক্যাম্নে গিয়া এই কিপ্টারে বিয়া করল আল্লাহই জানে।
#পরিশেষে_
তো এই হচ্ছে সমাজের অবস্থা। আর এইভাবে সমাজ বিয়ে করাটাকে কঠিন করে দিচ্ছে। আমরা আসলে যতই সভা সমাবেশ করে সুখী হতে চাই না কেন যতদিন না পর্যন্ত জন্মগত ভাবে ইনষ্টল করা আমাদের সামাজিক চিন্তাভাবনা গুলা চেইঞ্জ না হবে ততদিন পর্যন্ত কোনো লাভ নাই। আল্টিমেটলি যেই লাউ সেই কদু।
তো এই হচ্ছে সমাজের অবস্থা। আর এইভাবে সমাজ বিয়ে করাটাকে কঠিন করে দিচ্ছে। আমরা আসলে যতই সভা সমাবেশ করে সুখী হতে চাই না কেন যতদিন না পর্যন্ত জন্মগত ভাবে ইনষ্টল করা আমাদের সামাজিক চিন্তাভাবনা গুলা চেইঞ্জ না হবে ততদিন পর্যন্ত কোনো লাভ নাই। আল্টিমেটলি যেই লাউ সেই কদু।
সৌজন্যেঃ ইফতেখার আসিফ
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comment.