Post Collected from GBC Fb Group
সময়ের জানালা-০৪
"বিচার" শব্দটির আগে যেন "অ" যুক্ত না হয়!
গত পরশু দোকানে বসে চায়ে চুমুক দিতে দিতে একটা ঘটনা চোখে পড়লো আমার।একটা ১৫/১৬ বছরের ছেলের কোমরে রশি লাগিয়ে গলায় জুতার মালা দিয়ে পুরো বাজার হাটাচ্ছে,সাথে আমাদের মহাবিচারক (!) টাইপের দুই একজন সাবেক ও বর্তমান জনপ্রতিনিধি সেই কাজে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে,মসজিদগামী বাচ্চারা আনন্দে লাফাচ্ছে, ছেলেটি লজ্জায় লাল!
খবর নিয়ে জানলাম সে নাকি কার পকেটে হাত দিয়েছে টাকা চুরি করার জন্য,যদিও টাকা চুরি হয়েছে কিনা তার প্রমাণ মিলেনি!
এবার মুল আলোচনায় আসি,
১.ছেলেটি কেন চুরি করতে চাইলো তা তাকে জিজ্ঞাস করা হয়েছে কিনা জানি না।যদি সে যদি খাদ্যের অভাবে কিংবা পেটের জ্বালায় চুরি করে থাকে তাহলে তাকে শাস্তি দেওয়া কি অমানবিক না?
২.ছেলেটি চুরি করেনি, চুরির চেষ্টা করেছে!এই বাক্যটা মনে রাখা দরকার।
এই নিয়ে আমাদের সংবিধান কি বলে দেখে আসি,
সংবিধানের ৩৫ নং অনুচ্ছেদের ১ নং ধারায় বলা আছে,
"প্রচলিত আইনে অপরাধ হিসেবে ঘোষিত নয় এমন কোন কাজ করার কারণে কোনো ব্যক্তিকে অপরাধের দোষে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না।
অপরাধটি করার সময়ে ওই সময়ের আইন অনুসারে যে পরিমাণ শাস্তি বা দন্ড দেয়া যেত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে এর চেয়ে বেশী বা এর থেকে ভিন্ন ধরনের শাস্তি বা দন্ড দেওয়া যাবে না।"
সংবিধানের ৩৫ নং অনুচ্ছেদের ১ নং ধারায় বলা আছে,
"প্রচলিত আইনে অপরাধ হিসেবে ঘোষিত নয় এমন কোন কাজ করার কারণে কোনো ব্যক্তিকে অপরাধের দোষে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না।
অপরাধটি করার সময়ে ওই সময়ের আইন অনুসারে যে পরিমাণ শাস্তি বা দন্ড দেয়া যেত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে এর চেয়ে বেশী বা এর থেকে ভিন্ন ধরনের শাস্তি বা দন্ড দেওয়া যাবে না।"
আবার বাংলাদেশ সংবিধানের একই অনুচ্ছেদ ৩৫ (৫) ধারায় বলা আছে,
"কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না।কাউকে নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লজ্জাকর শাস্তি দেওয়া যাবে না বা কারো সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করা যাবে না।"
"কোনো ব্যক্তিকে যন্ত্রণা দেওয়া যাবে না।কাউকে নিষ্ঠুর, অমানুষিক বা লজ্জাকর শাস্তি দেওয়া যাবে না বা কারো সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করা যাবে না।"
আমার কথা এখানেই সামান্য টাকা চুরির অপবাদে একটা শিশুকে (বাংলাদেশের আইনে ১৮ বছরের নিচে সবাই শিশু) এই ধরণের শাস্তি দেওয়ার অধিকার আপনাকে কে দিল??
একটা কথা প্রচলিত আছে, "অপমানের চেয়ে মৃত্যু অনেক ভাল"
আপনি কিংবা আপনারা যারা ছেলেটাকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে বাজারে ঘুরিয়েছেন আপনারা কি ছেলেটার সামাজিক মর্যাদার কথা একবারও ভেবেছেন?সামাজিক ভাবে সে কতটা অপমান সইতে হবে?
ঘটনা এমন হয়েছে যে,আমাদের তথাকথিত শাসকরা পকেটমারি,বদনা চুরি ইত্যাদি নগন্য বিষয়গুলোই অপরাধ মনে করে, মনে হচ্ছে এ দেশে আর কোন চুরি নাই।যে চুরিই হোক সেটা বদনা হোক কিংবা ভোট হোক সব সমান নয় কি?
এই ছেলেটাই যদি ফিউচারে বড় মাপের চোর কিংবা ডাকাত হয় তখন আমাদের এ সব কথিত ন্যায় বিচারকরা(!) কি এর দায় এড়াতে পারবেন?
আমি বলছি না আমাদের এবারে মেম্বার চেয়ারম্যানরা এসেই এই অন্যায় করে পেলছেন,আমাদের সাবেক অনেক জনপ্রতিনিধি আছেন যারা নিজেদেরকে 'তুলা পিটানোর যন্ত্র" মনে করতো অথচ এটা অপরাধ!
আমি কারও প্রতি হিংসাপরায়ণ হয়ে কথাগুলো বলছি না।আপনি ক্ষমতায় আছেন আপনার হাতে শাস্তি দেওয়ার অধিকার আছে তাই বলে "অবিচার "করবেন না।
তাছাড়া দেশে বর্তমানে শিশু নির্যাতন বিষয়টা স্পর্শকাতর, কোন মতে একবার নদীর স্রোতের স্বরুপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ধরণের বিষয় ভাইরাল হয়ে পড়লে কথিত বিচারকদের পশ্চাদ্দেশ বাঁশ বাগানে পরিণত হবে।
so be careful!
[বি:দ্র: লেখাটা বড় হওয়ায় লজ্জিত এবং কষ্ট করে পড়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।]
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comment.