Post Collected from GBC Fb Group
কুরাইশ প্রধানরা শলাপরামর্শ করে ঠিক করলো মুহাম্মাদকে তাঁর বাঞ্ছিত কিছু দিয়ে নিরস্ত্র করাই বুদ্ধিমানের কাজ। সকলে মিলে মক্কার বিখ্যাত ধনী ও সর্দার উৎবাকে দূত হিসেবে ঠিক করলো।
সে সময় মহানবী(সা) কাবা গৃহে একাকী বসেছিলেন। এই সুযোগে কুরাইশ প্রধানদের দূত হিসেবে উৎবা এসে তাঁর কাছে উপবেশন করলেন। তারপর রাসুলুল্লাহকে(সা) লক্ষ্য করে নরম সুরে বলতে লাগলেন, “দেখ বাছা, তুমি আমাদের পর নও,কিন্তু যে বিপ্লব নিয়ে আসছ তা কি, তুমি জান। পূর্ব- পুরুষের ধর্ম থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করে নতুন এক অভিনব ধর্ম সৃষ্টি করছ…। এরূপ করার উদ্দেশ্য কি আজ তুমি আমাকে খুলে বল। ধন যদি চাও তাহলে আমরা তোমার পদপ্রান্তে স্বর্ণ ও রৌপ্যের স্তূপ এনে দিব। সম্মান যদি চাও তাহলে আমরা সকলে একবাক্যে তোমাকে প্রধান হিসেবে মেনে নেব। রাজত্ব করার আকাঙ্ক্ষা যদি থাকে তাহলে আমাদের বল , তোমাকে গোটা আরবের অধিপতি পদে অভিষিক্ত করবো…। সব কিছুর বিনিময়ে তোমার কাছে আমাদের শুধু প্রার্থনা তোমার ঐ অভিনব ধর্মের কথা একেবারে ভুলে যাও।”
উৎবার দীর্ঘ বক্তব্য শেষ হলে মহানবী(সা) হা-মীম আস সাজদাহ সূরা থেকে পাঠ করতে শুরু করলেনঃ “হা-মীম,দয়ালু করুণাময়ের পক্ষ থেকে এই গ্রন্থ, যার বাণীগুলো বিজ্ঞ লোকদের জন্য স্পষ্ট আরবি ভাষায় বিশদরূপে বিবৃত হয়েছে এবং যা (পুণ্যের পুরষ্কারের) সুসংবাদ দান করে ও পাপের (দণ্ড সম্পর্কে) সতর্ক করে থাকে। অনন্তর তাদের অধিকাংশই মুখ ফিরিয়ে নিল, তারা (উপদেশ) শ্রবণ (গ্রহণ) করে না। তারা বলে, যে (তাওহীদের) দিকে আমাদের আহবান করছে, আমরা তার ধারণা করতে পারিনা, তোমার কথা আমাদের কর্ণে প্রবেশও করে না। আর আমাদের ও তোমার মধ্যে একটা যবনিকা পড়ে আছে। অতএব তুমি চেষ্টা করতে থাক, আমরা চেষ্টায় রইলাম……।” এইভাবে মহানবী(সা) সূরার পাঁচটি রুকু তেলাওয়াত করলেন। অবশেষে সিজদার আয়াতে সিজদা করে তেলাওয়াত শেষ করলেন।
উৎবা মন্ত্রমুগ্ধের মত সবকিছু শুনলেন। কুরআনের সুললিত ছন্দ ও কথা তাঁকে একেবারে অভিভূত করলো। এত সম্পদ, এত সম্মান, এত বড় রাজ সিংহাসনের লোভ এমন অবলিলাক্রমে প্রত্যাখ্যান করতে দেখে উৎবা স্তম্ভিত হলেন। তিনি আনন্দ ও বিষাদে পূর্ণ এক মানসিক অবস্থা নিয়ে কুরাইশ সর্দারদের মজলিসে গিয়ে উপস্থিত হলেন। সকলের সাগ্রহ প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, “সেখানে যা শুনলাম আল্লাহর শপথ তেমন আর কখনও শুনিনি, আল্লাহর শপথ, ভাষার দিক দিয়ে তা কখনই কবির রচনা নয় এবং ভাবের দিক দিয়ে কখনই তা জাদুমন্ত্র নয়। হে কুরাইশ সমাজ, আমার উপদেশ, এই ব্যক্তি যা করে করুক তা নিয়ে তোমরা আর গণ্ডগোল করো না।”
উৎবার কথা কুরাইশ প্রধানদের চমকে দিল। তারা বলে উঠলো, “তাহলে মুহাম্মাদের যাদু তোমার উপরও কাজ করতে শুরু করেছে।”
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comment.